কিছু ওপেন সোর্স উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার


ওপেন সোর্সের যুগে উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারের ব্যবহার ক্রমেই কমে আসছে। বর্তমানে ওপেন সোর্সের দৌলতে ব্যবহারকারীরা অর্থের বিনিময়ে সফটওয়্যার না ক্রয় করে বরং ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের দিকে ঝুঁকছে বেশি। কারণ এসমস্ত সফটওয়্যার বিনামূল্য পাওয়া যায়। ফটোশপের মত সফটওয়্যারগুলো যেমন চড়া দামে কিনতে হয় সেখানে ফটোশপের মতই বিভিন্ন ওপেন সোর্স এডিটিং সফটওয়্যারগুলো বিনামূল্য পাওয়া যাচ্ছে। উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের জন্য তাই কিছু ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের কথা তুলে ধরব। এগুলোর অনেকগুলোই হয়ত অনেকে ব্যবহার করেছেন বা ব্যবহার করছেন।


১. 7-zip
7zip7-zip মূলত একটি ফাইল আর্কাইভার প্রোগ্রাম। সফটওয়্যারটি দিয়ে 7z, ZIP, GZIP, BZIP2 এবং TARফরম্যাটের ফাইলগুলো প্যাকিং এবং আন-প্যাক করা সম্ভব। তাছাড়া এটি দিয়ে RAR, CAB, ISO, ARJ, LZH, CHM, Z, CPIO,RPM, DEB এবং NSIS ফরম্যাটের ফাইলগুলোও আন-প্যাক করা যায়। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী একটি ফাইল আর্কাইভার। সফটওয়্যারটির কম্প্রেশন রেসিও WinZip এর থেকেও অনেক বেশি। বর্তমানে এটি WinZip এর বিপরীতে প্রচুর ব্যবহার করা হচ্ছে।

২. Audacity:
Audacity
Audacity ওপেন সোর্স ভিত্তিক ফ্রি রেকর্ডিং এবং সাউন্ড এডিটিং সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটি বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। সফটওয়্যারটি দিয়ে সরাসরি সাউন্ড রেকর্ডিং, কনভার্টিং ও Ogg Vorbis, MP3 এবং WAV সাউন্ড ফরম্যাট ফাইলগুলোকে সহজে এডিট করা যায়। সাউন্ড জোড়া লাগানো, কাটা, সংকুচিত করা, মিক্সিং প্রভৃতি কাজ গুলো করতে সফটওয়্যারটি পারদর্শী।


৩. Blender:
blender
3D অ্যানিমেশন তৈরীর জন্য Blender একটি মুক্ত সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটি মডেলিং, UV আনর‍্যাপিং, টেক্সারিং, স্কিনিং, রিগিং, রেন্ডারিং এবং 3D অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ব্লেন্ডার এতটাই সমৃদ্ব যে একে 3D ম্যাক্স ও মায়ার সাথে তুলনা করা হয়।


৪.ClamWin:
clamwin
ClamWin একটি ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটি Windows 98/Me/2000/XP তে ব্যবহার করা যায়। ClamWin কে বিভিন্ন বাণিজ্যিক অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার যেমন- নরটন, ম্যাকাফির বিকল্প হিসেবে গন্য করা হয়। সফটওয়্যারটি তার বহুবিধ ফিচার দিয়ে শক্তিশালী ভাইরাস ও স্পাইওয়্যার ধরতে সক্ষম। এটি সয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয় এবং মাইক্রোসফট আউটলুকে ই-মেইল অ্যাটাচমেন্টে ভাইরাস স্ক্যান করতে সহায়তা করে।


৫. eMule:
emule
eMule ওপেন সোর্স ভিত্তিক সাধারন পিয়ার-টু-পিয়ার(P2P) ফাইল শেয়ারিং টুল।

৬. Feedreader:
feedreader
Feedreader একটি মুক্ত ডেস্কটপ আরএসএস অ্যাগ্রিগেশন টুল। সফটওয়্যারটি ডেস্কটপে আপনার প্রিয় ওয়েবসাইট থেকে সয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট নামাতে সক্ষম। এটি অবিরতভাবে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আর্টিকেল ডেস্কটপে শো করবে।


৭. Filezilla:
filezilla
ফাইলজিলা একটি এফটিপি ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটি FTP,SFTP,FTPS প্রটৌকলসমূহ সমর্থন করে। এটি ব্যবহার করা বেশ সহজ এবং এটি নিরাপদ এফটিপি প্রটৌকল। এর অন্যতম ফিচার হল সার্ভারে আপলোড অথবা ডাউনলোড চলাকালে রিজিউম সাপোর্ট করে।


৮. Firefox:
firefox
ফায়ারফক্স বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় মুক্ত ওয়েব ব্রাউজিং প্লাটফরম। এর সাথে নতুন করে পরিচয় করে দেওয়ার কছু নেই। বর্তমানে অনেকেই এটি ব্যবহার করছেন। প্রচুর অ্যাড-অনের সমাহার ব্রাউজারটিকে অত্যন্ত শক্তিশালী করে তুলেছে। ইন্টারনেট এক্সপোলারের চেয়েও এটি অধিক নিরাপদ ব্রাউজিংয়ের সুবিধা দেয়।


৯. GIMP:
GNU ইমেজ ম্যানিপুলেশন প্রোগ্রাম(GIMP) একটি মুক্ত গ্রাফিক্স এডিটিং সফটওয়্যার। এটি অত্যন্ত চমৎকার একটি সফটওয়্যার যা ব্যয়বহুল ফটোশপের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গিম্পে মোটামুটি ফটোশপের মতই কাজ করে এবং এতে অনেক ইমেজ এডিটিং অপশন রয়েছে।



১০. Inkscape:
inkscap
ইঙ্কস্পেস মুক্ত ভেক্টর গ্রাফিক্স এডিটর সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটি এতই সমৃদ্বশালী যে একে বাণিজ্যিক সফটওয়্যার তথা Corel Draw, Adobe Illustrator, Freehand অথবা Xara X এর মত সফটওয়্যারের সাথে তুলনা করা হয়। নিজস্ব ফরম্যাট হিসেবে এরা Scalable Vector Graphics (SVG) এবং XML বেস্‌ড W3C স্টান্ডার্ড ব্যবহার করে থাকে। ওয়েব ২.০ এর বাটন,লোগো,আইকোন,ব্যানার ইত্যাদি তৈরীতেও এটি ব্যবহার করা হয়।


১১. Juice:
juice
জুস একটি ফ্রি এবং ওপেন সোর্স ভিত্তিক ক্রস-প্লাটফরম পোডকাস্ট রিসিভার অ্যাপ্লিকেশন। এটি ogg ও mp3 এর মত পোডকাস্ট মিডিয়া ফাইল ডাউনলোড করতে ব্যবহৃত হয়। জুস ব্যবহার করে পোডকাস্ট সিডিউল করা যায় এবং জুস আপনাকে নতুন পোডকাস্টের প্রাপ্যতা সম্পর্কে আপনাকে অবগত করবে। ডাউনলোডকৃত মিডিয়া ফাইলগুলো কপি হয়ে একটি ডিজিটাল প্লেয়ারে চলে আসে।


১২. OpenOffice.org:
open office
জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান স্টার অফিস নামক একটি সফটওয়্যার তৈরী করেছিল যা পরবর্তীতে সান মাক্রোসিস্টেম কিনে নেয় এবং ১৯৯৯ সালে বিনামূল্য মুক্ত করে। মাইক্রোসফট অফিসের মতই ফিচারগুলো ওপেন অফিসে বিদ্যমান। বর্তমানে এর বাংলা ইন্টারফেস পাওয়া যাচ্ছে। ওপেন অফিসের ডিফল্ট ফরম্যাট হল ওডিএফ। বর্তমানে এটি এতই বিস্তার লাভ করেছে যে ১১০টির অধিক ভাষায় সফটওয়্যারটি পাওয়া যাচ্ছে।


১৩. Programmers Notepad:
programmer
Programmer’s Notepad হল প্রোগ্রামাদের জন্য একটি সাধারন টেক্সট এডিটর সফটওয়্যার। কোড ফোল্ডিং, আউটলাইনিং, সিএসএস ব্যবহার করে এইচটিএমএলে এক্সপোর্ট, ওয়ার্ড র‍্যাপিং প্রভৃতি এই সফটওয়্যারটি দিয়ে করা যায়।


১৪. Sunbird:
sunbird
সানবার্ড মোজিলা ফাউন্ডেশন কর্তৃক তৈরীকৃত একটি ডেস্কটপ ক্যালেন্ডার অ্যাপ্লিকেশন।






১৫. Thunderbird:
thunderbird
থান্ডারবার্ডও মোজিলা ফাউন্ডেশন কর্তৃক তৈরীকৃত একটি ডেস্কটপ ই-মেইল অ্যাপ্লিকেশন। এটি ই-মেইল ব্যবস্থাপনাকে সহজতর ও গতিশীল করে। থান্ডারবার্ডে সহজে ইনবক্সকে ম্যনেজ করা যায়।





১৬. VLC media player: এ মুহূর্তের সবচেয়ে জনপ্রিয় মিডিয়া প্লেয়ারের মধ্যে ভিএলসি মিডিয়া প্লেয়ার একটি। এটি কেবল সর্বাধিক প্রচলিত ভিডিও ফরম্যাটগুলোকে সাপোর্ট এবং এক ফরম্যাট থেকে অন্য ফরমাটে কনভারশনই করে না, এর মধ্যে বিল্ট ইন আছে একটি ভিডিও স্ট্রিমিং সার্ভারও। এজন্য ব্যবহারকারীর প্রয়োজন হবে ভিডিও ফাইল বা ভিডিও ক্যাপচার ডিভাইস এবং অনলাইনে ভিডিও সম্প্রচার শুরুর করার জন্য কয়েকটা মাউস কিক।

আমার ব্লগ Copyright © 2011 - 2015 -- Blog Author Kalyan Kundu