সুইচ মোড পাওয়ার সাপ্লাই বা SMPS |
পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট এর মূল কাজ হচ্ছে আমাদের ইলেট্রিক লাইন থেকে ইলেক্ট্রিসিটি সংগ্রহ করে তাকে কনভার্ট করা। আমাদের ইলেট্রিক এর লাইনে থাকে ২২০ থেকে ২৪০ ভোল্ট এবং তা AC মোডে থাকে। আমাদের কম্পিউটার এর পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট টি এই ইলেট্রিকে ১২, ৬ এবং ৩.৩ ভোল্ট- DC, তে কনভার্ট করে।
ওয়াট = ভোল্টেজ x এম্পেয়ার (W= V x A)
সাধারনত সব ধরনের কম্পিউটার এর কাজের জন্য সব ধরনের পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট এর দরকার হয় না। যেমন;
- যে সমস্ত কম্পিউটার এ শুধু মাত্র টুক টাক কাজ করা হয়, (ইন্টারনেট সার্ফিং, মুভি দেখা, খুবি ছোট গেম খেলা, মাইক্রোসফট অফিস এ কাজ করা) তাদের জন্য ৩০০ ওয়াট এর একটি পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট যথেষ্ট।
- মাঝারি ধরনের একটি গেমিং কম্পিউটারের জন্য পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট হওয়া উচিত, ৫০০ থেকে ৮০০ ওয়াট এর।
- হাই এন্ড কম্পিউটারের জন্য দরকার ৮০০ থেকে ১৪০০ ওয়াট এর পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট।
- খুবি শক্তিশালি সার্ভার (বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গেমিং সার্ভার) এর জন্য ২ কিলো ওয়াট এর পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট লাগতে পারে।
কার জন্য কত ওয়াট দরকারঃ
- নরমাল এজিপি কার্ডঃ ২০ থেকে ৩০ ওয়াট।
- পিসিআই কার্ডঃ ৫ ওয়াট
- SCSI পিসিআই কার্ডঃ ২০ থেকে ২৫ ওয়াট।
- ফ্লপি ডিস্ক ড্রাইভঃ ৫ ওয়াট
- নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ডঃ ৪ ওয়াট
- সিডি রম ড্রাইভঃ ১০ থেকে ২৫ ওয়াট।
- র্যামঃ ১০ ওয়াট (প্রতি ১২৮ মেগাবাইটের জন্য)
- ৫৪০০ আর পি এম হার্ড ড্রাইভঃ ৫ থেকে ১১ ওয়াট
- ৭২০০ আর পি এম হার্ড ড্রাইভঃ ৫ থেকে ১৫ ওয়াট
- মাদারবোর্ড (সিপিউ, র্যাম ছাড়া)ঃ ২০ থেকে ৩০ ওয়াট।
গঠনঃ
বেশির ভাগ এস.এম.পি.এস স্কোয়ার শেপ, মেটাল বক্সের মধ্যে থাকে। সাধারনত দৈর্ঘ ৮৬ মিলিমিটার; প্রস্থ ১৫০ মিলিমিটার; এবং উচ্চতা ১৪০ মিলিমিটার;
কমবেশি সাত ধরনের কানেক্টর দেখাযায় এখনকার দিনের এ টি এক্স পাওয়ার সাপ্লাই এ। এগুলো হচ্ছে,
২৪ পিন এ টি এক্স (P1) মাদারবোর্ড এ পাওয়ার সাপ্লাই করে থাকে। সবচাইতে বড় এই কানেক্টরটি তে মোট ২৪ টি পিন থাকে, আসুন দেখে নেই এই ২৪ টি পিনের কোনটি কি কাজ করে,
২৪ পিন কানেক্টর |
টিপসঃ এস.এম.পি.এস কাজ করছে কি না, তা জানার জন্য, ২৪ পিন এ টি এক্স কানেক্টর টির সবুজ এবং কালো রঙ এর পিন দুটি কে সর্ট করে দিন। এবার পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট টি চালু করে দেখুন, ফ্যান ঘুরছে ? ঘুরলে আপনার পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট টি কাজ করছে।
কানেক্টর |
৪ পিন মোলেক্স (4 pin molex): কম্পিউটার এর বিভিন্ন পেরিফেরাল কে চালাবার জন্য এই ৪ পিন এর কানেক্টর টি ব্যবহার করা হয়। যেমন, হার্ড ড্রাইভ, সিডি / ডিভিডি রম ইত্যাদি। লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে, হলুদ রঙ এর তারে +১২ ভোল্ট, লালে +৫ ভোল্ট, এবং কালো হচ্ছে গ্রাউন্ড।
৪ পিন এফ ডি ডি কানেক্টরঃ এই কানেক্টর টী শুধু মাত্র ফ্লপি ডিস্ক ড্রাইভ এ পাওয়ার সাপ্লাই দেয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।একে অনেক সময়, মিনি মোলেক্স বলেও ডাকা হয়। এখানেও লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে, হলুদ রঙ এর তারে +১২ ভোল্ট, লালে +৫ ভোল্ট, এবং কালো হচ্ছে গ্রাউন্ড।
৪ পিন, পি৪_১২ভোল্টঃ এই পিন্ টি এ টি এক্স পি এস ইউ এর নতুন সংযোজন।একে পি৪ পাওয়ার কানেক্টর বলেও ডাকা হয়। পেন্টিয়াম ৪ প্রসেসর থেকে এর যাত্রা শুরু। পেন্টিয়াম ৪ প্রসেসর এর জন্য আলাদা ভাবে ১২ ভোল্ট বিদ্যুৎ প্রদান করাই এর কাজ।
সিরিয়াল এ টি এ পাওয়ার কানেক্টরসঃ আমাদের কম্পিউটার এর সাটা হার্ড ড্রাইভ এবং সাতা সিডি/ ডিভিডি রমের জন্য একটি স্পেশাল ধরনের ১৫ পিনের পাওয়ার কানেক্টর। এই ১৫ পিনের মধ্যে, ৩.৩ , ৫ এবং ১২ ভোল্ট সাপ্লাই হয়।
৬ পিন পিসিআই এক্সপ্রেস পাওয়ার কানেক্টরঃ আধুনিক যুগের গ্রাফিক্স কার্ড গুলো যে অনেক বেশি পরিমান বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, তাতো আমরা আগেই জেনে গেছি।আধুনিক বেশ কিছু গ্রাফিক্স কার্ড এর জন্য এই ৬ পিন পিসিআই এক্সপ্রেস পাওয়ার কানেক্টর, যা গ্রাফিক্স কার্ড কে আলাদা ৭৫ ওয়াট পর্যন্ত পাওয়ার দিতে সক্ষম।
৬ পিন আউক্স পাওয়ার কানেক্টরঃ এই পাওয়ার কানেক্টর টির, সাধারন কম্পিউটার এ তেমন একটা কাজে না লাগলেও বিভিন্ন ধরনের এক্সপেনশন কার্ড এ এই ধরনের পাওয়ার কানেক্টর ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কিছু তথ্যঃ
- আপনি জানেন কি, একটি পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট এর গড় আয়ু কত ? খুব বেশি না, মাত্র ১ লক্ষ্য ঘন্টা বা ১১ বছর (প্রায়)। তবে এটা নির্ভর করে, আপনি আপনার কম্পিউটার এর পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট এর কিভাবে যত্ন নিচ্ছেন। পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট টি কি বেশি গরম করে ফেলছেন ? ঠিক মতন এর গরম বাতাস যেন বের হয়ে যায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখছেন ? এর ফ্যানে যেন ধুলা বালি না জমে তা দেখছেন তো ? ইত্যাদি।
- যে কম্পিউটার সিস্টেম এ ঠান্ডা বাতাস চলাচলের সব রকমের ব্যবস্থা আছে, সেই কম্পিউটার এর পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট টি ততো ভালো থাকে।
- আধুনিক পাওয়ার সাপ্লাই গুলো এমন ভাবে তৈরী যে, আপনার কম্পিউটার কে সাট ডাউন করে রাখলেও আপনার কী বোর্ড এর কী বোর্ড পাওয়ার অন (Key Board Power ON – KBPO), Wake- On- LAN, Wake-On- Ring , পদ্ধতিতে চালু করে ফেলতে পারবেন।