কম্পিউটার হ্যাং হওয়ার কারণ কী ?

Computer Hang
কম্পিউটারের প্রসেসরের মান ভাল না হলেঃ-
কম্পিউটারের কাজ করার ক্ষমতা ও গতি নির্ভর করে কম্পিউটারের প্রসেসর উপর। আর প্রসেসরের মান ভাল না হলে কম্পিউটার হ্যাং হওয়াটাই স্বাভাবিক।

কম্পিউটার র‌্যামের পরিমাণ কম হলেঃ-
 আমরা যখন কোনো কাজ করি তখন যাবতীয় তথ্য সাময়িক ভাবে র‌্যামে সঞ্চিত হয় । আর এই র‌্যামের পরিমাণ কম হলে কম্পিউটার ঠিকমত কাজ করতে পারে না, তখন কম্পিউটারে হ্যাং করে।

কম্পিউটার হার্ডডিক্স এর কানেকশন ঠিকমত না হলেঃ-
কম্পিউটারের হার্ডডিক্স এর কানেকশন সঠিক না হলে হঠাৎ কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে।

প্রসেসরের কানেকশন ঠিকমত না হলেঃ- 
কম্পিউটারের প্রসেসরের কানেকশন ঠিকমত না হলে কম্পিউটার হঠাৎ করে হ্যাং হতে পারে এমনকি এর জন্য কম্পিউটার রিস্টার্ট করার পরেও ঠিক নাও হতে পারে। কেননা কম্পিউটারের সব কাজ করে থাকে প্রসেসর।

অন্য কোন হার্ডওয়্যারে ত্রুটি থাকলেঃ- 
এছাড়া অন্য কোনো হার্ডওয়্যার কানেকশন অথবা হার্ডওয়্যারে সমস্যা তাকলে কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে।

অপারেটিং সিস্টেমে ত্রুটি তাকলেঃ-
অপারেটং সিস্টেমে ত্রুটি বলতে কোনো সিস্টেম ফাইল মুছে বা কোরাপ্ট হওয়াকে বুঝায়। যার কারণে কম্পিউটার চলতে সমস্যা হতে পারে, ফলে কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে।

কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলেঃ- 
সাধারণত এই কারণেই কম্পিউটারে বেশী হ্যাং হয়। আর এই ভাইরাস অপারেটিং সিস্টেমের কিছু ফাইলের কার্যপদ্ধতিকে বন্ধ করে দেয় যার কারণে কম্পিউটার প্রায়ই হ্যাং হয়।

অনেক প্রোগ্রাম একসাথে চালু করলেঃ- 
হ্যা, এটার কারণে সবচেয়ে বেশী কম্পিউটার হ্যাং হয়। কম্পিউটার র‌্যাম এর পরিমাণ ৫১২ কিন্তু আপনি অনেক গুলো প্রোগ্রাম ওপেন করে রেখেছেন। তাহলে হ্যাং হওয়াটাই স্বাভাবিক। কেননা তখন কম্পিউটার র‌্যামে কাজ করার মতো আর কোন খালি জায়গা থাকে না।

হাই গ্রাফিক্স সম্পন্ন গেইম চালালেঃ- 
কম্পিউটারে র‌্যাম যদি কম হয় কিন্তু যদি হাই গ্রাফিক্স সম্পন্ন গেইম চালানো হয়, তাহলে কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে, কেননা র‌্যামে তখন কাজ করার মতো আর কোন খালি জায়গা থাকে না।

হাই গ্রাফিক্স সম্পন্ন সফটওয়্যার ব্যাবহার করলেঃ- 
কম্পিউটার গেইম এর পাশাপাশি কিছু সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলো খুব উচ্চ গ্রাফিক্স সম্পন্ন। যা সাধারনত কম র‌্যাম ও কম প্রসেসরের ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটারে চালনা করলে কম্পিউটার হ্যাং হয়।

কম্পিউটারের ফাইলগুলো এলোমেলোভাবে সাজানো থাকলেঃ- 
কম্পিউটারের ফাইলগুলো এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে তাকলে ঐ সব ফাইল নিয়ে কাজ করতে কম্পিউটারের অনেক বেশী সময় লাগে। যার করণে কম্পিউটার হ্যাং হয়।

কম্পিউটারে অতি উচ্চ মানের এন্টি ভাইরাস ব্যবহার করলেঃ- 
হ্যা, এ কারনেও কম্পিউটার হ্যাং হতে পারে, আমরা ভাইরাস হাত থেকে মুক্তি লাভের আশায় এন্টি ভাইরাস ব্যবহার করি। কিন্তু অনেক সময় এই উচ্চ ক্ষমতা ও উচ্চ মানের এন্টি ভাইরাস ব্যবহার কারার কারনে কম্পিউটার হ্যাং হয়।

ফেসবুক আসক্তি

facebook
গোটা বিশ্ব থেকে প্রায় ৭০ কোটির বেশি লোক ফেসবুকে ব্যবহার করে। এদের মধ্যে কমপক্ষে ২৫ কোটি প্রতিদিন ফেসবুকে লগ-ইন করে। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর গড়পড়তা ১৩০ জন করে ‘বন্ধু’ আছে। প্রত্যেক মাসে ফেসবুকের সব ব্যবহারকারী মিলে এর পেছনে ৫০ হাজার কোটি মিনিট সময় ব্যয় করেন। বহুল আলোচিত সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুক এই কথাগুলো নিজেই সদর্পে লিখে রেখেছে তার পরিসংখ্যান পাতায়।


ফেসবুকের দাবি করে, ব্যবহারকারীরা এক মাসে তার ফেসবুকের জন্য ৫০ হাজার কোটি মিনিট ব্যয় করে। এই বিপুল সময়কে ঘন্টা, দিন, বছর এভাবে হিসাব করলে আসে ৯ লাখ ৫১ হাজার ২৯৩ বছর। অর্থাৎ বিপুল জনগোষ্ঠীর এক মাসের মোট সময় থেকে সাড়ে ৯ লাখ বছর ফেসবুকের জন্য খরচ করাতে পারা ফেসবুকের কাছে দারুণ গর্বের বিষয়। ফেসবুকের নিজের এই গর্বের পেছনে যুক্তি আছে। কিন্তু যারা সেই সময়টা ফেসবুককে ‘উৎসর্গ’ করছে তারা কি পাচ্ছেন সেটা জানার জন্য ফেসবুক কি সে সম্পর্কে একটু ধারণা থাকা দরকার।

যারা ফেসবুক নিয়ে সময় কাটান না তাদের জানা উচিত তারা জিতছেন নাকি ঠকছেন। আর মা-বাবাদের জানা উচিত তাদের সন্তানরা ফেসবুকে বুঁদ হয়ে আসলেই কতটা ‘সামাজিক’ হয়ে বেড়ে উঠছে। এতে তাদের ছাত্রজীবন কিংবা ক্যারিয়ার জীবন কতটুকু লাভবান হচ্ছে।


ফেসবুক কি ?

ফেসবুক নিয়ে এত আলোচনা দেখে যারা এটি সম্পর্কে জানেন না তাদের অনেকের ধারণা হতে পারে ফেসবুক হয়তো জাতিসংঘের মতো কোনো ‘বিশ্বপ্রতিষ্ঠান’ যা বিশ্ববাসীকে ‘সামাজিক’ বানানোর দায়িত্ব পালন করে থাকে। আসলে ফেসবুক একটি ওয়েবসাইট ছাড়া আর কিছুই নয়। পৃথিবীর কোটি কোটি ওয়েবসাইটের মধ্যে একটি হচ্ছে এই ফেসবুক ডটকম। ফেসবুকে আপনিও একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন যেমন হটমেইল, জি-মেইল, ইয়াহু ইত্যাদিতে ফ্রি ইমেইল অ্যাড্রেস খোলা হয়। এরপর আপনি ফেসবুকে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকে আপনার পরিচয় লিখতে পারেন। আপনার ব্যক্তিগত ছবি রাখতে পারেন। আপনার বর্তমান অবস্থা, অবস্থান ইত্যাদি লিখে রাখতে পারেন। অন্যরা আপনাকে ‘বন্ধু’ হিসেবে তাদের অ্যাকাউন্টে যোগ করলে আপনার অ্যাকাউন্টে যা লিখে রেখেছেন কিংবা যেসব ছবি সেখানে দিয়ে রেখেছেন সেগুলো সবাই দেখতে পাবে। আপনার মন্তব্যের বিপরীতে কিংবা আপলোড করা ছবি নিয়ে অন্যরা মন্তব্য করতে পারে। একজনকে কিংবা একসাথে সর্বোচ্চ ২০ জনকে গ্রুপ মেসেজ পাঠাতে পারেন। দিন-রাত গেম খেলে সময় পার করে দিতে পারেন। অন্যদের প্রোফাইলে ঢুকে তারা যে মন্তব্য লিখে রেখেছেন কিংবা যেসব ছবি দিয়ে রেখেছেন তার বিপরীতে মন্তব্য লিখতে পারেন। এভাবে মন্তব্য কিংবা পাল্টা-মন্তব্য চালিয়ে যেতে পারেন। মোটামুটি এই হলো ফেসবুক এবং তার ‘সামাজিক যোগাযোগ’। .


তরুণ প্রজন্ম সামাজিক হচ্ছে ?

 তরুণ প্রজন্ম ফেসবুকের মাধ্যমে কি ধরনের সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করছে সেটা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে এদের মধ্যে অনেকে স্কুলছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত। এদের কমেন্ট লেখা গুলো  বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এদের মধ্যে কেউ কেউ রাত ১১ টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত এই ওয়েবসাইটের পেছনে সময় ব্যয় করেছে! তাদের ‘অ্যাকটিভিটি’ লিস্ট থেকে দেখা যায় সবাই এই সময়টুকু বিভিন্ন মেয়ের প্রোফাইলে মন্তব্য লিখে সময় কাটিয়েছে। একজন স্কুলছাত্র এক রাতে সর্বোচ্চ ৪১ জন মেয়ের প্রোফাইলের ওয়ালে কিংবা স্ট্যাটাসে মন্তব্য লিখেছে! মন্তব্যগুলো পড়লেই বোঝা যায়, এদের মধ্যে কেউই তাদের পরিচিত নয়। মোটামুটি মন্তব্যগুলোর ধরন এরকম, ‘আমি তোমার বন্ধু হতে চাই’, ‘তুমি এত সুন্দরী’, ‘বৃষ্টিতে ভিজলে তোমাকে দারুণ লাগবে’ ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় সব কথা। আর কেউ অন্যের ছবির অ্যালবামে ঢুকে সেখানে অশ্লীল মন্তব্য লিখেছে! তারা নিজের প্রোফাইলে হয়তো কোন কবিতার লাইন লিখে রেখেছে কিংবা ‘বন্ধুরা কেমন আছো’, কিংবা ‘পড়াশোনা ভালো হয়নি পরীক্ষায় ফেল করব’ ইত্যাদি ইত্যাদি। বেশিরভাগ মেয়ের আপলোড করা ছবিতে ছেলেরা হয় সৌন্দর্য্যরে প্রশংসা করেছে কিংবা অশ্লীল মন্তব্য লিখে রেখেছে। এভাবে দিনের কিংবা রাতের মূল্যবান সময় খরচ করে ‘সামাজিক যোগাযোগ’ রক্ষা করছে তরুণ প্রজন্ম!



বাঙালীর ফেসবুক বিলাস

পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ মিলে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে প্রায় ২০ লাখের বেশি। এদের মধ্যে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ তরুণীর সংখ্যা প্রায় শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ, যে বয়সটার মূল ব্রত হওয়া উচিত শিক্ষালাভ কিংবা ক্যারিয়ার গঠনে মনোনিবেশ। প্রতিটা ঘন্টাই যাদের জন্য অসীম গুরুত্বপূর্ণ তারা রাত জেগে এই ‘সামাজিক যোগাযোগ’ রক্ষা করে চলেছে! ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সীদের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারী আছেন শতকরা প্রায় ১০ ভাগ। অর্থাৎ, অপচয় করার মতো সময় যে বয়সী লোকদের থাকার কথা, কিংবা পুরানো বন্ধুবান্ধব কিংবা আত্মীয়-পরিজনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করার কথা যাদের, ফেসবুকের প্রতি তাদের আগ্রহ সামান্যই। ফেসবুক টিকে অল্পবয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যবান সময় গলধকরণ করে । ফেসবুক ছাত্রদের সাধনা? অধ্যয়নই ছাত্রদের একমাত্র তপস্যা- এই কথা বলে যুগে যুগে অভিভাবক ও শিক্ষকরা ছাত্রদের পড়াশোনায় উজ্জীবিত করে আসছেন। কিন্তু বিস্ময়করভাবে বাংলাদেশী কিছু ফ্যাশন হাউস বাজারে তরুণ-তরুণীদের জন্য টি-শার্ট ছেড়েছে যার বুকের ওপর লেখা ‘ফেসবুকই আধুনিক ছাত্র-ছাত্রীদের একমাত্র তপস্যা!’ যে ফেসবুক ছাত্রছাত্রীদের মূল্যবান সময় এভাবে গিলে খাচ্ছে, রাত জাগিয়ে স্বাস্থ্যহানি ঘটাচ্ছে সেই ফেসবুকের প্রতি তরুণ প্রজন্মকে এভাবে আসক্ত করার চেষ্টা কতটা দেশপ্রেমের পরিচয় সে প্রশ্ন অভিভাবকদের মনে জাগাই স্বাভাবিক।


মিথ্যা আর ছলনার বেসাতি

সরাসরি কারো সঙ্গে দেখা হয় না বলে ফেসবুক মিথ্যা আর ছলনা চর্চার উৎকৃষ্ট এক স্থান। যে যা নয়, তাই সাজার চেষ্টা করে অগণিত ব্যবহারকারী। পুরুষরা নারীর পরিচয়ে অ্যাকাউন্ট খোলে। আবার অনেক পুরুষ নিজেদের অনেক জ্ঞানী, ধনী কিংবা বিদ্যান পরিচয় দিয়ে নারীদের মন জয় করার চেষ্টা করে। মিথ্যা কথা বলে নিজের ওয়েবসাইটে ভিজিটর টানার চেষ্টা চলে। কিংবা সুন্দরী মেয়ে সেজে ব্যর্থ কিংবা হিংসুটে প্রেমিক তার প্রেমিকার মোবাইল নাম্বার ফেসবুকে হাজার হাজার ব্যবহারকারীর মধ্য ছেড়ে দেয়। কিংবা মেয়েদের ছবি কপি করে ফটোশপের সাহায্যে পর্ণো তারকাদের শরীরে জুড়ে দিয়ে ‘গোপন ক্যামেরায় তোলা’ বলে মেয়েটিকে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা চালায়।



উন্নত দেশগুলোর কি অবস্থা

বাড়ি কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসে অনেক ছাত্রছাত্রী কিংবা অফিসে বসে অনেক কর্মচারী ফেসবুকে সময় ব্যয় করাকে ‘সামাজিক যোগাযোগ’ বলে মনে করলেও তার সাথে একমত নয় উন্নত দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একং বড় বড় করপোরেট অফিস ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানী, ইটালিসহ উন্নত দেশগুলোর অধিকাংশ নামকরা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেসবুক ব্লক করা। এছাড়া বিখ্যাত আইটি ফার্ম রবার্ট হাফ টেকনোলজির পরিচালিত গবেষণা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ করপোরেট অফিসে ফেসবুক নিষিদ্ধ। এই হার ব্রিটেনে প্রায় ৭০ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়াতে প্রায় ৫৫ শতাংশ। ফ্রান্স, স্পেন, ইটালি, জার্মানী, জাপানসহ বহু দেশের অগণিত প্রতিষ্ঠানে ফেসবুক বন্ধ করে রাখা হয়। অনেক অফিসে ফেসবুক ব্যবহার ‘ছাঁটাইযোগ্য অপরাধ’ হিসেবে নিয়োগপত্রে শর্ত দিয়ে থাকে। ব্রিটেনে স্মার্ট আইটি পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ অফিস কর্মচারী স্বীকার করেছেন, বাড়ির পরিবারের লোকজনকে সময় দিতে হয়, তাই ফেসবুকে ব্যয় করার সময় তারা বের করেন অফিসে গিয়ে! ভারতেও বহু শিক্ষা ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ফেসবুক বন্ধ করে রেখেছে। এশিয়াতে জাপানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ লাখ আর চীনে মাত্র ৩৬ হাজার।


ফেসবুক আঙুল ফুলে কলাগাছ

বসে বসে বন্ধু খোঁজা এবং শত শত ফেসবুক ব্যবহারকারীর প্রোফাইলে মন্তব্য লেখাকে আপনি সামাজিকতা মনে করেন? তাহলে আপনাকেই দরকার ফেসবুকের। কারণ আপনি যত বেশি ‘সামাজিক’ হবেন ফেসবুকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তত টাকা জমা হবে। ফেসবুক ওয়েবসাইটে ঢুকে যত বার যেকোন লিংকে ক্লিক করবেন ততবার নতুন করে বিজ্ঞাপন লোড হবে (ডান পাশের সাইডবারে)। একবার লোড হলে তাকে ১ ইম্প্রেশন বলে। প্রতি ১ হাজার ইম্প্রেশনের জন্য ওই বিজ্ঞাপনদাতার নিকট থেকে ফেসবুক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পেয়ে থাকে। আর ক্লিক করলে তো আরো ভাল। দারুণ ব্যবসা! এই ব্যবসায়ে মূলধন হচ্ছে আপনার মতো ‘সামাজিক’ মানুষের অপচয় করা সময়। আপনি যত ক্লিক করবেন তত ইম্প্রেশন। দিন শেষে কয়েক কোটি ইম্প্রেশন দেখে ফেসবুক মালিকদের চোখে খুশির ঝিলিক ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ কয়েক কোটি ইম্প্রেশন মানে নিদেনপক্ষে কয়েক লাখ ডলার! ব্যবহারকারীরা ঘুর্নাক্ষরেও বুঝতে পারছেন না তাদের ব্যবহার করে কিভাবে কোটি কোটি ডলার আয় করছেন ফেসবুকের কর্ণধারেরা। ২০০৯ সালে ফেসবুকের আয় ছিল ৫৫০ মিলিয়ন ডলার। আর ২০১০ সালে আয় ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে তারা। একজন ব্যবহারকারীর দ্বারা সিপিএম অ্যাড থেকে ২ ডলার আয়ের টার্গেট থাকে ফেসবুকের।


ফেসবুক পক্ষাবলম্বনকারীদের যুক্তি

ফেসবুকে ছেলেবেলার বন্ধুদের খুঁজে পাওয়া যায়। তাই যদি হয় তাহলে স্কুল বা কলেজে যাদের একসঙ্গে পড়েছেন তাদের খুঁজে বের করা কি জীবনের বড় ব্রত? একজন মানুষের জীবনকালে এই বন্ধু খুঁজে বের করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ? ছাত্র জীবন, পারিবারিক জীবন, ক্যারিয়ার জীবনের চেয়েও ? ছাত্র জীবন ধ্বংস হচ্ছে, পারিবারিক জীবনে অশান্তি আসছে, ক্যারিয়ার জীবনে মনোনিবেশ কমছে। ক্যারিয়ার জীবনে এসে যাদের সঙ্গে সরাসরি কিংবা ফোনে যোগাযোগ আছে সামাজিকতার জন্য তারাই কি যথেষ্ট নয়? সবার প্রোফাইলে ঢুকে ‘কমেন্ট’ লেখাই কি সামাজিকতা? একজন মানুষ কি দৈনিক ৩-৪ ঘন্টা এই ওয়েবসাইটে ব্যয় করছে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের খুঁজতে?


চোরাবালি

বুদ্ধি আছে বটে ফেসবুকের নির্মাতাদের। কেউ যদি মনে করে থাকেন ফেসবুকে ঢুকে ‘মাত্র’ দুই/এক ঘন্টা ব্যয় করে বের হব, তবে সে গুড়ে বালি! কারণ ফেসবুক চোরাবালি বিছিয়ে রেখেছে এর নির্মাণশৈলীতে। এই চোরাবালির কাজ করছে কোটি কোটি সুন্দরী তরুণীর ছবি। কিশোর, তরুণ, যুবক, প্রৌঢ় পর্যন্ত ছুটছে এসব নাম ঠিকানা না জানা ‘সুন্দরী’ দের পিছে। এসব সুন্দরীদের প্রায় অর্ধেকই ভুয়া। তবুও ছায়ার পেছনে ছুটছে তারা। একবার বন্ধু তালিকায় যোগ করে শুরু হয় তার মন যোগানোর পালা। বিভিন্নভাবে তাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা। দুই-এক দিন না যেতেই এবার মোবাইল নাম্বার চাওয়া শুরু। প্রেম নিবেদন শুরু। এক মেয়ের ছবির নিচে প্রশংসা বাণী লিখছে শত শত পুরুষ।


জীবনে কত বন্ধুর প্রয়োজন

ফেসবুকে একজন পুরুষের গড়ে আড়াইশ’ বন্ধু আছে। আর একজন মেয়ের গড়ে ১ হাজার বন্ধু আছে! কোনো কোনো মেয়ের বন্ধুসংখ্যা ৫ হাজার! পুরুষের বন্ধু তালিকায় যারা থাকে তার অল্প কয়েকজন তার চেনাজানা পুরুষ কিংবা নারী বন্ধু আর বাকিরা হয় অপরিচিত নারী কিংবা নারীর ছদ্মবেশী পুরুষ। তরুণরা ফেসবুকে ঢুকে মেয়ে ব্যবহারকারীদের মনোযোগ আকর্ষণে বেশিরভাগ সময় ব্যয় করে।



রুচি বিকৃতদের স্বর্গরাজ্য

মানুষ কিভাবে তাদের মেধার অপচয় করতে পারে ফেসবুক তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। ফেসবুকে লাখ লাখ ছবি, কার্টুন ও ভিডিও যোগ করে ব্যবহারকারীরা। এসব ছবির মধ্যে আছে দেশ, জাতি কিংবা ব্যক্তির প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ ছড়ানোর উপকরণ। কিংবা বীভৎস দৃশ্যের ছবি। বিশ্বের বিখ্যাত মনীষী, রাজনীতিক, কিংবা ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ ও আপত্তিকর ছবি শেয়ার করে মজা পায় এক শ্রেণীর কুরুচিপূর্ণ মানুষ। যতই সম্মানিত ব্যক্তি হোক না কেন, তার ব্যাঙ্গাত্মক ছবি যখন মানুষের হাসির খোরাক যোগায় তখন সেটাকে নিছক গণতান্ত্রিক অধিকার বলার সুযোগ নেই। সংবাদপত্রের পাতায় রাজনীতিবিদদের কার্টুন আর ভিন্নমত পোষণকারী সাধারণ মানুষের বিদ্বেষমূলক কার্টুন এক হতে পারে না। এরা নিজের প্রোফাইলে এসব ছবি ঢুকিয়ে অন্যের প্রোফাইলে ‘ট্যাগ’ করে দেয়। যার প্রোফাইলে ছবি ট্যাগ করা হয় সে নিজে তো দেখতে পায়, তার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা অন্য সবাইও তা দেখতে পাবে। সেখান থেকে সমমনা কুরুচির কয়েক ডজন ‘বন্ধু’ হয়তো তাদেরও বন্ধুদের প্রোফাইলে ‘ট্যাগ’ করে দিল সেখান থেকে প্রত্যেকের কয়েক ডজন করে বন্ধু তাদের বন্ধুদের ‘ট্যাগ’ করে দিল যাকে বলে চেইন রিয়েকশন! মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষের মধ্যে। চলে হাসাহাসি, ঠাট্টা ,বিদ্রুপ, বিকৃত আনন্দ ভোগ। অনেকে আবার মেয়েদের ফটো অ্যালবাম থেকে ছবি নিয়ে সেই ছবির মাথা কম্পিউটারের সাহায্যে পর্ণো তারকাদের দেহে জুড়ে দিয়ে তার প্রোফাইলেই আবার ট্যাগ করে দেয়! পৃথিবীর কোটি কোটি পুরুষের কম্পিউটারে একজন মেয়ের ছবি থাকা অবশ্যই নিরাপদ নয়; কিন্তু ফেসবুকের কল্যাণে তাই ঘটছে। নিজেও জানেন না, আপনি সামাজিকতা পালন করতে গিয়ে যে ছবি শেয়ার করেছেন তা কত কোটি বখাটে পুরুষের কম্পিউটারে সেভ করা হয়েছে।




ফেসবুকের সবটাই খারাপ ?

 না। খুব কম জিনিসই আছে যার সবটুকু খারাপ। ফেসবুকও তেমনি। ফেসবুকে একটি মন্তব্য লিখে আপনি সবাইকে জানিয়ে দিতে পারেন আপনার অবস্থা কিংবা অবস্থান। সেলিব্রেটিরা তাদের ভক্তদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে পারেন। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ রাখতে পারে ক্লায়েন্টদের সাথে। বিভিন্ন গ্রুপ করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে পরস্পরের সাথে। নিজের অনুভূতি শেয়ার করতে পারেন বন্ধুদের সাথে। এছাড়ও ইমেইল কিংবা ইন্সট্যান্ট মেসেঞ্জারের মতো বিকল্প অনেক রাস্তা আছে, যেগুলোকে বিকল্প যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

facebook user


এই লেখাটি  Shohan ahamed লেখা থেকে ও  কিছু নিজের অভিগতা থেকে লেখা ।

উইন্ডোজে ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি করবেন কিভাবে ?

internet speet
Widows আমাদের ব্যবহৃত ইন্টারনেটের গতির প্রায় 20% কমিয়ে রেখে দেয় । Windows এটা করে,  কারন তার Update নেয়ার জন্য । আর তাই আমরা Windows Update এর বেশীর ভাগ সময় বুঝতে পারিনা । কিন্তু Internet Browsing সময় এই 20% কম গতিতে ব্রাউজিং করতে হয় । তবে সামান্য কিছু পরিবর্তন করলেই ইন্টারনেটের গতি কিছুটি বাড়িয়ে নিতে পারি ।




কিভাবে এই কাজটি করবেন ?

1. প্রথমে  ক্লিক করুন Run option ।
2. এখানে gpedit.msc টাইপ করে এন্টার কী প্রেস করুন ।
3. এরপর Administrative Templates -এ ডাবল ক্লিক করুন ।
4. Network -এ ডাবল ক্লিক করুন ।
5. QoS Packet Scheduler -এ ক্লিক করুন ।
6. বামদিকে Limit Reservable Bandwidth লেখাটির উপর ডাবল ক্লিক করুন ।
7. এখন  Enable অপশনে ক্লিক করে Bandwidth Limit(%) 0 করে দিন ।
8. এরপর Apply -এ ক্লিক করে OK বাটনে ক্লিক করুন ।

শেষে কমপিউটার কে একবার Restart করে নিন । এরপর আশা করি আগের থেকে কিছুটা বেশি গতি অনুভব করতে পারবেন ।

আমার ব্লগ Copyright © 2011 - 2015 -- Blog Author Kalyan Kundu